ডায়াবেটিস রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতীকার
বর্তমান বিশ্বে ডায়াবেটিস একটি বিপাকজনিত রোগ। মানব দেহের ইনসুলিন নামের হরমোনের সম্পূর্ণ বা অপেক্ষিক ঘাটতির কারণে বিপাকজনিত গোলযোগ সৃষ্টি হয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং এক সময় তা প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে আসে। এইভাবে ডায়াবেটিস রোগ হয়ে থাকে।ডায়াবেটিস হয় জেনেটিক ও লাইল স্টাইলগত কারণে।অনেক ক্ষেত্রে শারিরীক পরিশ্রমের অভাব, ওজন বেশি হয়ে যাওয়া, বয়স, ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারনেও ডায়বেটিস হতে পারে যেমন স্টেরয়েট হরমোন, থাইয়াজাইট ওজন বেশি হওয়ার কারনে ডায়বেটিস হতে পারে কারন ওজন বেশি হলে ইনসুলের কার্যক্ষমতা কমে যায়। ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ,ক্লান্তি বা দূর্বলতা বোধ করা খোশ-পাঁচড়া, ফোঁড়া জাতীয় চর্মরোগ দেখা দেওয়া খুব বেশী পিপাসা লাগা, ক্ষত শুকাতে বিলম্ব হওয়া বেশী ক্ষুধা পাওয়া।ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।যারা দীর্ঘ দিন যাবত এই রোগে ভুগছেন, তাদের হয় তো এই সব লক্ষণ দেখা নাও দিতে পারে। তবে পরীক্ষাতেই ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। ডায়াবেটিস রোগীর শরীর দুর্বল হলে, প্রচুর শাক সব্জি খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে এবং প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়। যেমন পাতা জাতিয়শাকসব্জি এবং টক ফল। এছাড়া পানি জাতিয় সব্জিতে সুগার থাকে না এবং এতে প্রচুর ভিটামিন থাকে। যেমন লাউ, কুমরা, পটল, করলা, চিচিঙ্গা এগুলো খেলে ভিটামিনের অভাব পুরোন হয় এবং ডায়াবেটিস এর জন্যও ভালো। সহজ ভাবে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রন করার জন্ প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম ( দ্রুত হাঁটা – ১মিনিটে ১২০ কদম, নিয়মিত ৩০-৬০ মিনিট হাঁটলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৩৫-৪০ শতাংশ কমে যায়।নিয়মিত ব্লাড সুগার, বছরে অন্তত একবার এইচবিএ ওয়ানসি, লিপিড প্রোফাইল, সিরাম ক্রিয়েটিনিন, প্রসাবে অ্যালবুমিন পরীক্ষা করান, ব্লাড প্রেসারও দেখতে হবে নিয়মিত। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ না রাখতে পারলে যেসব মারাত্বক উপসগ' অথবা জটিলতা দেখা দেয় তা হল,পক্ষাঘাত, স্নায়ুতন্ত্র জটিলতা,হৃদরোগ,পায়ে পচনশীল, ক্ষত, চক্ষুরোগ, পরবতী'তে কিডনীর কায'ক্ষমতা লোপ পায়।তাছাড়া যৌনক্ষমতাও কমে যায়।এবং মহিলাদের ক্ষেএে বেশি ওজনের শিশু জন্ম, মৃত শিশু জন্ম,অকালে সন্তান প্রসব,জন্মের পরই শিশুর মৃত এবং নানা ধরনের জন্মত্রুতি দেখা দিতে পারে। শরীরের ওজন বেশী থাকলে তা কমিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসা,কম থাকলে তা বাড়িয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসা এবংওজন স্বাভাবিক মাএায় থাকলে তা বজায় রাখা আবশ্যক। চিনি, মিষ্টি জাতীয় খাবার যতটা সম্ভব পরিহার করা।শক'রা বহুল খাবারগুলি(যেমন চাল,ডাল,আটা,দিয়ে তৈরী খাবার,মিষ্টি ফল ইত্যাদি) কিছুটা হিসাব করে খেতে হবে।বিনিময়ে আশবহুল খাবার (ডাল,শাক,সবজি,টক ফল ইত্যাদি)বেশী খেতে হবে।সম্পৃক্ত চবি' (যেমন:ঘি,মাখন,ডালডা, মাংস ইত্যাদি) কম খাওয়া, পরিবতে'অসম্পৃক্ত চবি' (উদ্ভিদ তৈল,অথা'ত সয়াবিন তৈল,সূয'মুখীর তৈল ইত্যাদি)সব ধরনের মাছ খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে নিদিষ্ট সময়ে খাবার খেতে হবে। ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল ?খালি পেটে / Fasting Blood Sugar: 70 -110 mg/dl ভরা পেটে / 2HABF: upto 140 mg/dl ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায় ? ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ ???সাধারণত ডায়াবেটিস 40 mg/dl এর নিচে বা 400 mg/dl এর চেয়ে বেশী হলে রোগী স্ট্রোক করতে পারে। ডায়াবেটিস এর চিকিৎসা কি ? ডায়াবেটিস কখনো নিরাময় হয় না,তবে একে নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়।মেডিসিন ও নিয়মমাফিক জীবনযাপন করলে ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করে সুস্থ থাকা যায়। ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয় ?চোখের সমস্যা (রেটিনোপ্যাথি)/ ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ডায়াবেটিক ম্যাকুলার ইডিমা , যা দৃষ্টি সমস্যা বা অন্ধত্বের কারণ হতে পারে।গ্লুকোমা / Glucoma পায়ের সমস্যা (হাতে-পায়ে ঝি ঝি করা, জ্বালাপোড়া করা, ব্যথা করা, অলটার সেন্সেশন বা হেঁটে যাচ্ছেন পায়ের তলায় নরমাল একটা সেনসেশন হচ্ছে) ইউরোলজিক্যাল বা ইউরিনারি ব্লাডারের সমস্যা হলে- প্রস্রাবের কিছু সমস্যা হতে পারে। (রিটেনশন হয়ে যাওয়া, প্রস্রাব আটকে থাকা, কন্ট্রোলে না থাকা) হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক,কিডনির সমস্যা (নেফ্রোপ্যাথি)।স্নায়ুর ক্ষতি (নিউরোপ্যাথি),মাড়ির রোগ এবং মুখের অন্যান্য সমস্যা। যৌন সমস্যা।ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস ডায়াবেটিস কমানোর উপায় শারীরিক পরিশ্রম করা নিয়মমাফিক খাওয়া-দাওয়া করা,পর্যাপ্ত ঘুম,মানসিক স্ট্রেস থেকে দূরে থাকা। নিয়মিত টেস্ট করার মাধ্যমে সর্তক থাকা।